মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) প্রতিনিধি:
জেলার চারটি সংসদীয় আসন বহালের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতন চলছে ৪৮ ঘণ্টা সর্বাত্মক হরতালে, সড়ক-মহাসড়ক অবরোধের দ্বিতীয় দিনেও সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে দেশের দ্বিতীয় সমুদ্র বন্দর মোংলাসহ পুরো বাগেরহাট জেলা।
বিএনপি ও জামায়াতসহ সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির ডাকা ৪৮ ঘণ্টার টানা হরতালে৪৮টি দূরপাল্লার ও আন্তঃজেলার সব রুটে যানবাহন চলাচল আজও বন্ধ রয়েছে।মোংলা বন্দরের আমদানি-রফতানি পণ্য সড়ক পথে পরিবহনও বন্ধ রয়েছে।
হরতালকারীরা সকালে জেলা, উপজেলার নির্বাচন অফিস ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ায় কর্মকর্তা কর্মচারীরা অফসে ঢুকতে পারেনি। জেলার সব উপজেলা ও পৌর শহরগুলোতে সর্বাত্মক হরতাল পালিত হচ্ছে। হরতালের প্রথম দিনে শহরের দোকানপাট, ব্যবসা, ব্যাংক, বীমা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি অফিসের কার্যক্রম বন্ধ ছিল।
হরতাল ও সড়ক অবরোধে জেলার মোরেলগঞ্জে পানগুছি ও মোংলা নদীতে সড়ক বিভাগের ফেরি চলাচলও বন্ধ রয়েছে। জেলার সড়ক-মহাসড়কের মোড়ে মোড়ে অসংখ্য পয়েন্টে পিকেটাররা টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছ ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার পাশাপাশি মাছ ধরা জাল দিয়েও মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। এর ফলে মোংলা বন্দরসহ পুরো বাগেরহাট সারাদেশ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে।প্রথম দিনের হরতাল চলাকালে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবে, কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে বিপুল সংখ্যক পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
অপরদিকে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির কো কনভেনর ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম সর্কাত্মক হরতাল পালনের আহবান জানিয়ে এক গন বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন, তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের একটি সংসদীয় আসন কমিয়ে জনগণের আশা- আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করেছে।বাগেরহাট একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা, ভৌগোলিক অবস্থা, জনসংখ্যা, মোংলা বন্দর, ইপিজেড- শিল্পাঞ্চল ও দুইটি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইডসহ ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনায় চারটি আসন বহাল রাখা প্রয়োজন। একটি আসন কমে গেলে রাজনৈতিকপ্রতিনিধিত্বের পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামো উন্নয়ন, চাকরি ও বিভিন্ন সরকারি সেবায় বাগেরহাটবাসী বঞ্চিত হবে, তাই আমরা দাবি আদায়ে সবাইকে নিয়ে আন্দোলনে নেমেছি।
জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা রেজাউল করিম বলেন, বাগেরহাটবাসীর স্বার্থ রক্ষার এই আন্দোলন কোনো দলীয় আন্দোলন নয়, এটি জনস্বার্থের আন্দোলন। নির্বাচন কমিশনকে অবিলম্বে আসন পুন:র্বিন্যাসের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে বাগেরহাটের চারটি আসন বহাল রাখতে হবে। তা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ জুলাই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের বিশেষ কারিগরি কমিটি খসড়া প্রস্তাবে বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি কমিয়ে তিনটি রাখার প্রস্তাব দেয়।এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে জেলার রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনগুলো নির্বাচন কমিশনের শুনানিতেও অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু তাদের দাবিকে উপেক্ষা করে গত ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত গেজট প্রকাশ করে।