বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন বহালের দাবিতে ৮ ঘন্টার হরতাল ও মহাসড়ক অবরোধ পালিত

মোরেলগঞ্জ(বাগেরহাট)প্রতিনিধি:

বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখার দাবিতে রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ৮ঘন্টা বাগেরহাট জেলা সদরসহ ৯টি উপজেলায় সর্বাত্বক হরতাল ও মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি।

কোন অপৃতিকর ঘটনা ছাড়াই হরতাল ও অবরোধ চলাকালে জেলা শহরসহ ৯টি উপজেলার সদরে সব ধরনের যানবাহন চলাচল, দোকানপাট, ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান, সরকারি বেসরকারী অফিস ও স্কুল কলেজ বন্ধ ছিল। মোংলা বন্দরে জেটিতে পন্য ওঠানামা ও পরিবহনও বন্ধ ছিল। মোংলা ইপিজেড ও শিল্পাঞ্চালেও কোন কাজ হয়নি। মোংলা- খুলনা, মোংলা-ঢাকা, বাগেরহাট-ঢাকা, খুলনা-বাগেরহাট-বরিশার, সাইনবোর্ড-শরণখোলা মহাসড়কসহ জেলার সব উপজেলা সড়কগুলোতেও দূরপাল্লাসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।

এমনকি হরতাল ও মহাসড়ক অবরোধ চলাকালে জেলার ছোট বড় নদীর খেয়া ও সড়ক বিভাগের ফেরীও চলাচলও বন্ধ ছিল। এরফলে মোংলা বন্দরসহ বাগেরহাট জেলা সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ৮ঘন্টা সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। হরতাল ও মহাসড়ক অবরোধ নিয়ে ব্যপক প্রচারনা চালানোর ফলে লোকজন ঘর থেকে তেমন একটা বের হয়নি। তবে, এদিন জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের অনার্স প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরিা থাকায় পরিার্থীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। তাদের পায়ে হেটে পরিা কেন্দ্রে আসতে হয়েছে। একইদিন ঢাকায় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সামনে বিােভ মিছিলসহ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বাগেরহাট জেলার বিুব্দ জনতা।

হরতাল ও মহাসড়ক অবরোধ চলাকালে সাবেক সিনিয়র সচিব মশিউর রহমান, সাবেক সিনিয়র সচিব ড. ফরিদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় বিএনপির গবেষনা সম্পাদক শামিমুর রহমান শামীম, বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহবায়ক প্রকৌশলী এটিএম আকরাম হোসেন তালিম, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম, যুগ্ম আহবায়ক ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম, যুগ্ম আহবায়ক খাদেম নিয়ামুন নাসির আলাপ, সাবেক এমপি শেখ মুজিবর রহমান, বিএনপি নেতা প্রকৌশলী মাসুদ রানা, শেখ কামরুল ইসলাম গোরা, শেখ শাহেদ আলী রবি, সৈয়দ নাসির আহমেদ মালেক, জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি ফকির তারিকুল ইসলাম, সাবেক সাধারন সম্পাদক সুজন মোল্লা, জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা রেজাউল করিম, নায়েবে আমীর এ্যাডভোকেট শেখ আব্দুল ওয়াদুদ, জামায়াতের জেলা সেক্রেটারী শেখ মোহাম্মদ ইউনুস, জেলা জামায়াতের যুব বিষয়ক সম্পাদক মঞ্জুরুল হক রাহাত, জেলা জামায়াত নেতা অধ্য আব্দুল আলীম দলীয় নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার হাজার হাজর নারী পুরুষদের নিয়ে জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে বক্তব্য রাখেন।

মোরেলগঞ্জ নব্বইরশি বাসষ্টান্ডে সকারল বাগেরহাট-৪ আসন বহাল রাখার দাবিতেবক্তব্য রাখেন গণমানুষের নেতা অধ্য আব্দুল আলিম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি শহিদুল হক বাবুল, উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা শাহাদাত হোসেন, নায়েবে আমির মাস্টার মনিরুজ্জামান, পৌর বিএনপির সভাপতি শিকদার ফরিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিলন, জামায়াতের পৌর আমির মাস্টার রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আল আমিন হোসাইন, সাবেক পৌর বিএনপির সদস্য সচিব অধ্য জাহাঙ্গীর আল আজাদ, যুবদল নেতা মোঃ মনিরুজ্জামান মনির, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহŸায়ক আবু সালেহ এবং বারইখালী ইউনিয়ন জামায়াত ইসলামী আমির মুহিবুল্লাহ রফিক, জামায়াত ইসলামী পৌর নেতা মোঃ ইব্রাহিম হোসেন হাওলাদারসহ সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি মোরেলগঞ্জ উপজেলা ও পৌর শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

কর্মসূচি চলাকালে নের্তৃবৃন্দ বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন রয়েছে। বর্তমান সিইসি আওয়ামাীলীগ ও ভারতে প্রেসক্রিপশন সংসদ নির্বাচন বানচাল করতে কাজ করছে। ভারতের সিদ্ধান্তেই বাগেরহাটের আসন কমিয়ে তিনটি আসন করেছেন, যেটা বাগেরহাট জেলাবাসী কিছুতেই মেনে নিবেনা। বাগেরহাটকে উন্নয়ন বঞ্চিত করতে পরিকল্পিক ভাবে একটি কমানোর প্রস্তাব করেছে নির্বাচন কমিশন। সোমবার শুনানীতে নির্বাচন কমিশন জেলার চারটি সংসদীয় আসন বহাল না করলে মঙ্গলবার থেকে অনিদৃষ্টকালের জন্য মোংলা আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দরের পন্য ওঠানামা বন্ধ করে বাগেরহাট জেলাকে সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন করে দেয়া হবে হুশিয়ার করেন। এতে করে মোংলা বন্দরের মাধ্যমে দেশের আমদানী রপ্তানী বানিজ্য বন্ধ হলে এর দায়দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন ও অন্তর্বর্তীকালিন সরকাকেই নিতে হবে। সিইসি তাঁর এমন হটকারী সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করলে অচিরেই নির্বাচন কশিশন অফিস ঘেরাও করে রাখা হবে বলেও হুশিয়ারী দেন বক্তারা।

গত ৩০ জুলাই দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন কমিশন আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি আসন কমিয়ে জেলায় তিনটি আসন করার প্রস্তাব দেয়। এরপর থেকেই বাগেরহাট জেলাবাসী খোভে ফুঁসে ওঠে। এরপর থেকে বিএনপি জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি গঠন করে লাগাতর কর্মসূচি পালন করে আসছে।