৯ বছরের আবদুর রহমান সাড়ে ৬ মাসে কুরআনের হাফেজ

মোরেলগঞ্জ(বাগেরহাট)প্রতিনিধি:

 

বাবা-মায়ের ইচ্ছাপূরণ করতে মাত্র সাড়ে ৬ মাসে মহাগ্রন্থ পবিত্র আল কুরআন মুখস্থ করে হাফেজ হওয়ার গৌরব অর্জন করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে ৯ বছর বয়সী মেধাবী শিশু মুহাম্মদ অবদুর রহমান। হাফেজ অবদুর রহমান (৯) বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলা সদও পৌরসভার বারইখালী ফেড়িঘাট সংলগ্নে অবস্থিত মারকাজ ওমর আল ফারুক (রা.) মাদ্রাসার শিার্থী। এ মাদ্রাসা থেকেই সে মাত্র ৬ মাস ১৫ দিনে পবিত্র কোরআন শরিফের ৩০ পাড়া অর্থাৎ পূর্ণাঙ্গ কুরআন শরিফ মুখস্থ করে কৃতিত্বের সঙ্গে হিফজ বিভাগের পড়াশোনা সম্পন্ন করেছে। মেধাবী মুহাম্মদ অবদুর রহমানের এ কৃতিত্বে মাদ্রাসার পরিচালক মুফতি আবদুল কুদ্দুস অশ্রাফী ও প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য শিকরাও বেশ আনন্দিত। হাফেজ অবদুর রহমান উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের উমাজুরী গ্রামের মো. শফিকুল ইসলাম ও ফারজানা বেগম দম্পতির ছোট ছেলে। ২ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে সে ২য়।

 

শিশুটির মা ফারজানা বেগম বলেন, মহান আল্লাহ আমাদের ইচ্ছা পূরণ করেছেন। স্বপ্ন ছিল ছেলেকে হাফেজ বানানোর। তাই বাড়ির পাশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থেকে প্রথম শ্রেণির লেখাপড়া শেষে স্কুল থেকে নিয়ে ছেলেকে মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেই। আল্লাহর অসিম কৃপায় মাত্র সাড়ে ৬ মাসে ছেলেটা আমাদের স্বপ্ন পূরণ করেছে। ছেলের এ সাফল্যে ওর দাদা-দাদিসহ আমরা পরিবারের সবাই অত্যন্ত খুশি। মাদ্রাসার হুজুরদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। দেশবাসীর নিকট হাফেজ আবদুর রহমানের জন্য দোয়া চাচ্ছি, আমাদের ছেলে বিজ্ঞ আলেম হয়ে যেন মানুষ ও ইসলামের খেদমত করতে পারে।

 

মারকাজ ওমর আল ফারুক (রা.) মাদ্রাসার পরিচালক হাফেজ মাওলানা মুফতি আবদুল কুদ্দুস আশ্রাফী জানান, মা-বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে হাফেজ হওয়ার উদ্দেশ্যে ৭ বছর বয়সে অবদুর রহমানকে মাদ্রাসায় ভর্তি করা হয়। এরপর নুরানী-নাজেরা বিভাগের পাঠ শেষ করে চলতি ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে হিফজ পড়া শুরু করে। শুরু থেকেই আবদুর রহমান পড়াশোনার প্রতি বেশ মনোযোগী ছিল। শিশুটি খুবই মেধাবী, উদ্যমী ও সেই সাথে ন¤্র-ভদ্র এবং বিনয়ী হওয়ায় মাদ্রাসার শিকসহ সকলের নজর কাড়তে সম হয়। বাবা-মায়ের দোয়া এবং শিকদের ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় এক পর্যায়ে মাত্র ৬ মাস ১৫ দিনে ৯ বছর বয়সে পবিত্র কোরআন হেফজ সম্পন্ন করে অবদুর রহমান। তার মেধা ও চেষ্টায় সে এমন গৌরব উজ্জ্বল সাফল্য লাভ করেছে। খুব শিগ্রই তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে পাগড়ী প্রদান করা হবে। আমি তার জন্য দোয়া করছি, লেখাপড়া শিখে সে যেন বড় ধরনের একজন ইসলামি স্কলার হয়ে দ্বীনের দ্বায়ী হতে পারে।

 

নিজের ইচ্ছাশক্তি ও পরিশ্রমকে কাজে লাগিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে হাফেজ হওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করে মা-বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরে উচ্ছ্সিত অবদুর রহমান নিজেও। অল্প সময়ে হাফেজ হওয়ার এ সাফল্যে খুশি তার সহপাঠীরাও। শিশু হাফেজ আবদুর রহমান বলেন, মা-বাবার দোয়া ও মাদরাসার ওস্তাাদদের সহযোগিতায় আমি সাড়ে ৬ মাসের মধ্যে হিফজ্ সম্পন্ন করি। সবার কাছে দোয়া চাই আমি যেন ভবিষ্যতে একজন হক্কানী আলেম হয়ে দেশ জাতি ও ইসলামের থেদমত করতে পারি।

 

মাদ্রাসা সংলগ্ন স্থানীয় বাসিন্দা মো. সাইফুল ইসলাম ফরাজী মাদ্রাসার পরিচালকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, শিশু হাফেজ আবদুর রহমানের এ কৃতিত্বের জন্য শুভ কামনা জানাই, শুধু মাদ্রাসার শিকরাই নয় আমরা এলাকাবাসীও বেশ খুশি। তাদের প্রত্যাশা ইসলামের প্রচার- প্রসারে এ ক্ষুদে হাফেজ বিশেষ ভূমিকা রাখবে। সমাজের মানুষ এ থেকে আরো বেশি অনুপ্রাাণিত হবে তাদের সন্তানদের দ্বীনি শিায় শিতি করতে।