মোরেলগঞ্জ(বাগেরহাট)প্রতিনিধি:
পূর্ব সুন্দবনের চাঁদপাই রেঞ্জের কলমতেজী এলাকার টেপারখালের বনাঞ্চলে লাগা আগুন নিভে গেছে। তবে, অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ক্ষতির পরিমাণ বনবিভাগ তাৎণিকভাবে জানাতে পারেনি। এদিকে, প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করতে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছে।
অপরদিকে, শাপলার বিল এলাকায় নতুন করে অগ্নিকান্ডের খবর পাওয়া গেছে। রোববার সকালে ওই এলাকায় আগুনের ধোয়া দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী বন বিভাগকে খবর দেয়। তৎণিকভাবে বনরক্ষীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ফায়ারলাইন কাটা শুরু করে।
বনবিভাগ সুত্রে জানা যায়, রোববার সকালের মধ্যেই বনবিভাগ, ফায়ার সার্ভিসের শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ ও বাগেরহাটের ৩টি টিম, ভিটিআরটি টিম, টাইগার টিম ও এলাকাবাসী সহযোগিতায় কোষ্টগার্ডের কারিগরি সহায়তা নিয়ে আগুন সম্পূর্ণ নিভানো সম্ভব হয়েছে। দুপুর সোয়া ১২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে আগুন নিভানো কাজ সমাপ্তির ঘোষণা দেয়ার পরপরই খবর পাওয়া যায় ঘটনাস্থল থেকে ২ কিলোমিটার দুরত্বে শাপলার বিলে আগুন জ্বলছে।
ধানসাগর বন সংলগ্ন এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ পান্না মিয়া জানান, রোববার সকাল ১০টার দিকে ধানসাগর ষ্টেশন ও গুলিশাখালী টহলফাড়ির মধ্যবর্তী শাপলার বিলের বনাঞ্চলে আগুনের ধোয়া দেখতে পান এলাকাবাসী। ঘটনাস্থলটি লোকালয় থেকে ৩কিলোমিটার গভীর বন এলাকায়। তাৎণিকভাবে খবরটি বনবিভাগের নজরে আনে। এর পরপরই শাপলার বিলের দিকে রওয়ানা হন ডিএফও (পূর্ব) ও ধানসাগর ষ্টেশন কর্মকর্তা সহ অন্যান্য কর্মকর্তা বৃন্দ। শাপলার বিল সংলগ্ন লোকালয়ের একাধিক ব্যক্তি ও বনবিভাগ সুত্র দুপুর সোয় দুইটায় জানায়, ওই বিলের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে এবং তা ব্যপক ভাবে ছড়িয়ে পড়ছে।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মোহাম্মদ নূরুল করিম জানান, রোববার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে আগুন সম্পূর্ণ নিভানো হয়েছে বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। বনভূমির আনুমানিক ৩-৪ একর জমির গাছপালা ভষ্মিভুত হলেও টাকার অংকে তাৎণিকভাবে তিনি ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেননি। তিনি আরও জানান, কলমতেজির আগুনের ঘটনা তদন্তে চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) দ্বীপন চন্দ্র দাস কে প্রধান করে এবং ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা বিপুলেশ্বর দাস ও কলমতেজি ফরেস্ট টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম কে সদস্য করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি, কমিটিকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে আগুন লাগার কারণ উৎঘাটন করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
শাপলার বিলের অগ্নিকান্ডের ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে, চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) দ্বীপেন চন্দ্র দাস জানান, ওই এলাকায় ডিএফও স্যার সহ আমরা ঘটনাস্থলে আছি। তবে, শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, মংলা, চিতলমারী ও বাগেরহাটের পৃথক ৫টি টিম ঘটনাস্থলের দিকে ইতোমধ্যে রওয়ানা হয়েছে। পানির সংকটের কারণে আগুন নেভানোর কাজ এখনো (দুপুর ২.১৫মি:) শুরু করা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য: আমুরবুনিয়া এলাকার বনে গত বছরের ৪মে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছিল। এভাবে প্রতিবছর অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। কিন্তু অগ্নিকান্ডের রোধ কল্পে যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়া হচ্ছেনা বলে বন সংলগ্ন এলাকাবাসী খোব প্রকাশ করছেন।